• বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

রামগঞ্জে উজাড় হচ্ছে কৃষিজমি: নীরব প্রশাসন

  • প্রকাশিত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

রামগঞ্জ(লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:

রামগঞ্জে নির্বিচারে ফসলি জমি উজাড় করে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে।  ইটভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীদের এসব কাজে অবৈধ মুনাফার জন্য সহযোগিতা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ রাজনীতিক নেতারা।  পরিবেশ আইন অমান্য করে মাটি কাটার সাথে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন মাটি কাটার বিষয় জানার পরও রহস্যজনক কারনে নীরব।  যেন দেখার কেউ নেই।  চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে এক্সকাভেটর দিয়ে আবাদি জমিতে পুকুর খনন ও উপরিভাগের মাটি কেটে শতাধিক ট্রাক্টর দিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন ইটভাঁটিতে।  এভাবে জমির মাটি কাটার ফলে আবাদি জমির উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে।  পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মাটির জৈব গুনাগুন। নিচু হয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি।  এতে জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যায় ভারসম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।

ভোলাকোট ইউনিয়নের দুধরাজপুর,দেহলা,ভোলাকোট কৃষি মাঠে থেকে অত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলুর ছোট ভাই আল মদিনা ইটভাটার মালিক বিল্লাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জামান হোসেন দুলাল পাটোয়ারী, বিএনপির নেতা সিরাজ হুজুর মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটাায়।  নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশৈরই,বরিয়াইশ কৃষি মাঠ থেকে মেসার্স রাবেয়া বিক্সস ম্যানুফ্যাকচার ইটভাটার মালিক আবুল খায়ের পাটোয়ারী, শৈরশেই গ্রামে হারুন সাদেক ও বিএনপির নেতা কাজী ফরিদ মাটি কেটে নিচ্ছে। জানা যায়, এ ছাড়াও ভাটরা ও করপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন কৃষি মাঠে মাটি কাটা চলছে।

মাটি ব্যবসায়ীরা প্রথমে কৃষিমাঠে মধ্যে অভাবী জমির মালিকদেরকে অর্থের লোভে ফেলে জমি কিনে নেয়।   পরে ওই জমিতে ১৫ থেকে ২০ফুট গভীর করে মাটি নিয়ে যায়।  এতে পাশ্ববর্তি জমি ভেঙ্গে পড়ে যায়।  তাই, বাধ্য হয়ে জমি মালিক তাদের নিকট জমি বা মাটি বিক্রি করে দেন।

সচেতন মহলের ভাষ্য, এভাবে জমির মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে একসময় কৃষিতে বিপর্যয় দেখা দেবে।  কমে যাবে আবাদি জমির পরিমাণ। জমি থেকে কেটে নেওয়া মাটি সরবাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।   এত জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়েছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রন আইন(সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী,কৃষিজমির টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে।   পরিবেশ আইন অনুযায়ী,কৃষিজমির মাটি কাটা দন্ডনীয় অপরাধ।

এ আইনে শাস্তির বিধান হলে এজড়িত ব্যক্তির দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের কারাদন্ড।  একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদন্ড হবে।   এক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্য সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রাশেদ ইকবাল বলেন, পরিবেশ আইন অনুযায়ী ,কৃষিজমির মাটি কাটা দন্ডনীয় অপরাধ।  এ ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত আছে।  অভিযোগ পেলে, দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads